এক পলকের দেখা
-ফারুক আহম্মেদ জীবন
প্রতিদিনের মতন আজও সৌরভ দুপুরের খাবার খেয়ে ছোট্ট একটা ঘুম দেবে ভাবছিলো।
গতকাল রাতে সৌরভ একটু গভীর রাত জেগে বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার মধ্যকার সেমিফাইনাল ক্রিকেট খেলা দেখেছে ।
সত্যিই অসাধারণ খেলেছে গতকাল বাংলাদেশের টিমের ক্রিকেটার খেলোয়ারেরা।
অল্প কয়েক রানে বাংলাদেশের টাইগারেরা অবশেষে হেরে গেলেও…
পুরো ম্যাচটাই ছিল যেনো প্রায় মার..মার..অবস্থা।
এক কথায়___
___বাঘ সিংহের লড়াইয়ের মতোই দেখার মতোই
ছিল পুরো ম্যাচটি।
গতকালের ম্যাচটিতে বাংলার টাইগাররা বুঝিয়ে দিয়েছে বিশ্বের ক্রিকেট জগতের মাঝে তারাও এখন এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী টিম। যাদেরকে ইচ্ছা করলেই ভারত কেনো যেকোন দেশ খুব সহজে আর হারাতে পারবেনা।
বরাবরি সৌরভ আবার ক্রিকেট খেলার প্রতি খুবি ইন্টারেস্টটেড।
আর তাইতো খেলা শেষ না হওয়া অবধি সৌরভ রাতজেগে খেলা দেখেছে।
নিদ্রাহীনতায় চোখ দুটো যেন ঘুমে ঢুলুঢুলু অবস্থা সৌরভের।
কথায় আছে না…
এক রাতের ঘুম সাত রাতেও পূরণ হয়না। সৌরভ বেশ বুঝতে পারছে। শরীরটাকে চাঙ্গা করার জন্য এই মুহুর্তে ঘুমোনোর খুব প্রয়োজন।
সৌরভ সিঁড়ি বেয়ে তার ঘরে যাওয়ার জন্য উপরে উঠতেই হঠাৎ কলিং বেলটা বেজে উঠলো।সৌরভের মা জয়তুন নেছা বললো.. সৌরভ
দেখতো বাবা কে এলো..?
শরীরটা খুব টায়ার্ড লাগা সত্ত্বেও মায়ের কথায়
বললো…ঠিক আছে দেখছি মা। তারপর সৌরভ
দুই এক পা,নিচে নেমে দরজাটা খুলতেই ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা অপরূপা সুন্দরী একটা অচেনা মেয়ে সৌরভের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি মধুর কোকিল কন্ঠে সালাম দিলো…
আসসালামু আলাইকুম।সৌরভ দেখে চেনার চেষ্টা করতে করতে আমতা আমতা ভাবে সে সালামের জবাব দিলো.. ওয়া আলাইকুমুস সালাম। মেয়েটি বললো….
নন্দিনী কি বাসায় আছে…?
সৌরভ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মাথাটা নিচু করে জিজ্ঞাসা করলো কোন নন্দিনী..? তারপর বললো
এ বাড়ির ভাড়াটি কাশেমের মেয়ে..? নাকি…আমার…বোন নন্দি.. এ পর্যন্ত বলা মাত্রই
সৌরভের কথা শেষ হওয়ার আগেই মেয়েটি
বলে উঠলো জ্বী, আমি এ বাড়ির মালিকের মেয়ে নন্দিনীর কথা বলছি।
সৌরভ: ও আচ্ছা.. হুম..আছে..।
মেয়েটি সৌরভকে উদ্দেশ্য করে বললো… এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো..নাকি ভিতরে যেতে পারি? সৌরভ একটু লজ্জিত হয়ে বললো…
ও সরি…আসুন..আসুন ভিতরে আসুন…। মেয়েটি সৌরভের পিছুপিছু রুমে ঢুকলো।
সৌরভ একটু উচ্চ স্বরে নন্দিনীকে ডাকলো।এই নন্দিনী..নন্দিনী…এই নন্দিনী…?
নন্দিনীও একটু জোরে ডাক শুনে বললো…জ্বী ভাইয়া আসছি….।
সৌরভ :দেখ তো…তোর এক কোন বান্ধবী তোর সাথে দেখা করতে এসেছে।
আসছি ভাইয়া..বলে নন্দিনী কিচেন রুম থেকে বের হয়ে ওড়না দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে মুছতে মিষ্টিকে দেখে…দ্রুত পায়ে হেটে এসে মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বললো…আরে মিষ্টি তুই!আয় আয় বস। কি-রে হঠাৎ কি মনে করে আজ আমাদের বাসায়..?
কবে থেকে তো তুই আসবি…আসবি…করিস।
আর, আজ বুঝি তোর সেই আসার সময় হলো হুম..?
মিষ্টি সোফায় বসতে বসতে বললো…বাব্বাহ!–তুইতো দেখছি ঘেমে ভিজে পুরো একাকার হয়ে গেছিস নন্দিনী!
রান্না করছিলি বুঝি..? খালা মণি কোথায়..?
নন্দিনী :আরে না..না…রান্না নয়। আম্মুকে জাস্ট একটু হেল্প করছিলাম। আম্মু রান্না ঘরেই আছে।
মিষ্টি বললো…ও আচ্ছা!
তারপর বললো…আসলে নন্দিনী তুই তো জানিস কলেজ টাইম ছাড়া আব্বু সচরাচর আমাকে একা কোথাও বেরুতে দেয়না।
আজ একটু তোর কাছে বিশেষ দরকার তাই…।
মিষ্টির মুখের কথা কেড়ে নিয়েই…নন্দিনী বললো..
থাক.. থাক.. হয়েছে… তবুও তুই যে এসেছিস।
এটাই তো আমার বড় ভাগ্য।
মিষ্টিকে দেখে সৌরভের দু,চোখের নিদ্রা যেনো টুটে গেছে। ওদের দুজনের কথাপকথন শুনতে শুনতে সৌরভ টেবিলে রাখা পত্রিকাটা হাতে নিয়ে
সোফায় বসে পত্রিকার আজকের হেডলাইন গুলো এক নজর দেখছিলো।
মেয়েটির নাম যে মিষ্টি, নন্দিনীর কথায় তা- জানতে পারলো সৌরভ।
সত্যিই মাংসল গোলগাল চেহারার মধ্যে মাঁয়াবী ভাসাভাসা দুটি চোখ। আর লম্বা এলো চুলে দেখতে মেয়েটাকে অনেক মিষ্টি লাগছে। তার উপর ওর লাজুক মুখের হাসিটা যেনো আরো বেশি পাগল করা।
মেয়েটিকে এক পলক দেখেই সৌরভের খুব ভালোলেগে গেল। ওর সুগভীর মায়াবী চোখে
কেমন যেনো একটা যাদু রয়েছে।
দরজা খুলে মেয়েটির চোখে সৌরভের চোখ পড়তেই যেনো ওর দৃষ্টি সৌরভের মনকে তীরের
মতো বিদ্ধ করেছিল। এর আগে কথা বলার সময় কত মেয়ের চোখেই তো চোখ পড়েছে সৌরভের কিন্তু, এমন তো কখনো মনে হয়নি..।
মনে মনে যেনো ভালোবেসে ফেললো সৌরভ ক্ষনিকের দেখা মেয়েটিকে।
সৌরভ ভাবলো এমন একটা মেয়েকেই তার জীবন সঙ্গী করবে। নন্দিনীর সাথে মিষ্টির কথা বলার সময় সৌরভের কানে এলো। মিষ্টি নন্দিনী
কে বলছে। শুক্রবার আমার বিয়ে তুরা কিন্তু সবাই বিয়েতে যাবি।
নন্দিনী শুনে একটু জোরে কংগ্রাচুলেশন্স বলতেই
মুখের উপর মিষ্টি আঙ্গুল দিয়ে ইশারায় সৌরভকে দেখালো লজ্জায়।
মিষ্টির বিয়ের কথা সৌরভের দুটি কানে আসতেই সৌরভের মনে হলো যেনো…
হঠাৎ বিনা মেঘে তার মাথায় বজ্র পড়লো।
সৌরভের হার্টবিডের ধুকপুকানি শব্দ যেনো দিগুণ পরিমাণে বেড়ে গেল।
তারপর হঠাৎ শুনতে পেলো মিষ্টি নন্দিনীকে
বলছে জানিস নন্দিনী….ছেলে পক্ষ না যৌতুক চেয়েছে।তবু আব্বু কেন যে বিয়েটা ভেঙ্গে না দিয়ে রাজি হয়ে গেল। আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা..।
জানিস, ছেলেটা কেমন যেনো একটা গুন্ডা..গুন্ডা. টাইপের মাতাল গোছের দেখতে…।
এ বিয়েতে আমার না, একদম মত নেই। তবুও আমার আব্বুর মুখের দিকে তাকিয়ে…।
মিষ্টির শেষের কথা গুলো সৌরভের কানে আসতে
সৌরভ আবার যেনো…
মেঘে ঢাকা আকাশে এক চিলতে সূর্যের আলোর রশ্মির দেখা পেলো।
এক পলকের ক্ষনিকের দেখাতে মিষ্টিকে নিয়ে সৌরভ মুহুর্তের মধ্যে মনে কতোইনা স্বপ্নের জাল বুনেছে। মায়ের কথার শব্দে সৌরভের সচেতনতা ফিরলো। জয়তুন বললো..কিরে নন্দিনী এভাবে..
মা মিষ্টিকে নিয়ে শুধুই কি গল্পই করবি? না কিছু খেতে দিবি মেয়েটিকে..?
জয়তুনের হাতে রাখা খাবারের প্লেট টেবিলের উপর রেখ বললো…নাও মা আগে কিছু মুখে দাও তারপর না হয় বসে কথা বলো..।
জয়তুন নেছাকে দেখেই মিষ্টি দাঁড়িয়ে সালাম দিলো। তারপর নিচু হয়ে কদমবুসি করলো।
জয়তুন: থাক..থাক.. মা, আর কদমবুসি করতে হবেনা। বেঁচে থাকো, আল্লাহ তেমায় সুখী করুক।
তারপর বললো…তোমার আব্বু…আম্মু বাড়ির অন্যরা সবাই কেমন আছে..?
মিষ্টি বললো…জ্বী সবাই ভালো আছে। আপনার শরীর কেমন আছে খালা মণি..?
জয়তুব: আর আমার ভালো থাকা মা। ইদানীং বাত ব্যথাটা খুব বেড়েছে। আর গ্যাস্ট্রিকের জন্য তো ভালো করে তেমন খেতেও পারিনা।
নাও মা, দু,গাল খেয়ে নাও। মিষ্টি :না..না..খালা মণি, আমি বাড়ি থেকে এই মাত্র খেয়ে বেরুলাম।
এখন আর আমি কিছু খেতে পারবোনা।
জয়তুন: তাই বললে হয়, অন্তত কিছু একটু মুখে দাও..। মিষ্টি সৌরভের দিকে লজ্জা রাঙা মুখে
আড়ে তাকাচ্ছে।
সৌরভ বুঝতে পারলো মিষ্টি লজ্জায় কোন কিছু খাচ্ছেনা। তাই ওকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সৌরভ বললো..মা আমি একটু বাইরে যাচ্ছি..।
তারপর নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে বললো… তুরা কথা বল হুম।তারপর বেরিয়ে যেতেই.মিষ্টির দিকে একবার আড় চোখে তাকিয়ে কথা বলুন. আসছি বলে বাইরে বেরিয়ে গেলো সৌরভ।
মিষ্টি আড় চোখে হুম সম্মতি দিতেই আবারো দুজনার একবার চোখাচোখি হলো।
খালা মণির জোরাজুরিতে মিষ্টি আর না করতে পারলোনা। শেষে দুটো মুখে দিতেই হলো। খাওয়া শেষ করে সৌরভের মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে। মিষ্টি নন্দিনীকে বললো. তুরা সবাই কিন্তু অবশ্যই আসবি।
এই প্রথম কিন্তু আমার তরফ থেকে তোদের দাওয়াত দিলাম। আফটার অল তুই আমার সব
চেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড সেজন্য বুঝলি..?
বলেই মিষ্টি দরজা দিয়ে বেরুতেই সৌরভের সাথে ধাক্কা খেলো। মিষ্টি, ওহ সরি.. বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার সময় সৌরভকে বললো আপনিও কিন্তু আসবেন নন্দিনীর সাথে আমাদের বাড়িতে কেমন..।
সৌরভ কিছু বলার আগেই মিষ্টি দ্রুত পা চালিয়ে গেট দিয়ে বেরিয়ে গেল..।
সৌরভ শুধু মিষ্টির কথায় মলিন মুখে ওর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে একবার ঘাড়টা নাড়লো।
কয়েকদিন পর মিষ্টির বিয়ের দিন। নন্দিনীদের বাড়ির সবাই গেল বিয়েতে। সৌরভও গেল সাথে।
বিয়ের পড়ানোর সময়। ছেলে হঠাৎ বলে উঠলো। না…না…আমি টাকা না পেলে এই বিয়ে করবোনা।
মিষ্টির বাবা ছেলের হাত ধরে বললো তুমি আমায় কয়েকটা দিন সময় দাও বাবা।
আমি যখন কথা দিয়েছি তখন যেভাবেই হউক
টাকা দিয়ে দেবো।
ছেলে মিষ্টির বাবার হাতটা নাগড়া মেরে ছাড়িয়ে।
বললো…না.. না..আপনি মিথ্যুক আপনি একটা মিথ্যাবাদী। বিয়ের আসরেই আপনার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিলো। আপনি আপনার কথা রাখেননি। না..না..আপনার আর কোন কথা শুনতে চাইনে। তারপর বরযাত্রীদের লক্ষ্য করে বর বললো…এই সব উঠ… চল এ বিয়ে হবে না।
সৌরভ যেনো এমনি একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো। সে এই সুযোগটাকে লুফে নিলো।
সৌরভের মনে হলো….
এ যেনো মেঘ না চাইতেই জল।
সৌরভের বন্ধু এলাকার থানার দায়িত্বরত ওসি। সে এক পাশে গিয়ে ফোন করলো তার বন্ধুকে।
ফোন শেষে মিষ্টির আব্বুর কাছে গিয়ে হাত ধরে বললো….আঙ্কেল এ কি করছেন আপনি?কেনো
যৌতুক দিয়ে মিষ্টিকে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন?
আর ওর মতো লোভী অমানুষের হাতই বা কেনো ধরছেন আপনি?
বর: সৌরভকে বললো..দেখুন মিয়া আপনার কথা বার্তা কিন্তু হচ্ছেনা। আমার কিন্তু একটা মান সম্মান আছে।এতক্ষণে সৌরভের মেজাজটা পুরো
-টাই বিগড়ে গেছে।
কথা শেষ হওয়ার আগেই সৌরভ সজোরে চটাৎ করে একটা চড় বসিয়ে দিলো বরের মুখে।
আরো বললো…
রাখ বেটা তোর মান সম্মান। তোর মত বেয়াদবের আবার মান সম্মান আছে নাকি?
মিষ্টির বাবাকে দেখিয়ে বললো…একজন পিতার বয়সী মানুষ। তোর হাতটা ধরে তার মেয়ের জন্য কাকুতি মিনতি কান্নাকাটি করছে। আর তুই কিনা.
কথাটা শেষ হতে না হতেই.. পুলিশের গাড়ি এসে হাজির হলো। সৌরভের বন্ধু পুলিশ বরকে দেখেই বলে উঠলো আরে…এই সালাকেই তো আমরা এতদিন ধরে খুঁজছি।
সৌরভ বললো মানে…? কি বলছিস তুই দোস্ত ?
হুম ঠিক বলছি দোস্ত।এ শালা একটা বড় মাদক ব্যবসায়ী। ওর নামে বহু নারী পাচারের অভিযোগ
ও রয়েছে।সৌরভ শুনে বিস্মিত সুরে বলে উঠলো. ও মাই গড! কি বলছিস দোস্ত তুই ? ওসি বাবুল বললো…হুম, আমি ঠিকই বলছি দোস্ত।
অনেক ধন্যবাদ তোকে।তোর জন্য আজ আমি এই ক্রিমিনালটাকে ধরতে পারলাম।আর ওকে যখন ধরতে পারলাম। আশা করি রিসেন্টলি ওর মাধ্যমে ওদের পুরো গ্যাংটাকেই ধরতে পারবো।
আর এই মুহুর্তে ওকে যৌতুক দাবীর জন্য এরেস্ট করছি। তারপর বললো..এই সিপাহি ওর দুই হাতে হ্যান্ডকাপ লাগাও। তারপর সৌরভের দিকে তাকিয়ে বললো…সৌরভ দোস্ত আসিরে। অনেক ধন্যবাদ তোকে। ভালো থাকিস ওকে গুড বাই।
সৌরভও হাত নেড়ে বললো..হুম গুড বাই।
মিষ্টির আব্বা এগিয়ে এসে সৌরভের হাত ধরে বললো..তুমি…তুমি…অনেক বড় বিপদের হাত থেকে আমার মেয়েটাকে বাঁচালে বাবা। কি বলে যে তোমাকে আমি ধন্য. কথা শেষ হওয়ার আগেই মিষ্টির বাবার হাত ধরে সৌরভ বলে উঠলো…।
ছিঃ…ছিঃ.. এসব কি বলছেন আঙ্কেল!আমি আপনার ছেলের মতো। ও যে একটা টাওট সেটা ওর মুখ দেখেই প্রথমে আমি তা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম।
তারপর ওর যৌতুক নিয়ে বাকবিতণ্ডা করতে
দেখে আমি পুলিশকে কল করেছিলাম।
মিষ্টির আব্বু বললো: খুব ভাল করেছো বাবা..তা না হলে যে আমার মেয়েটার জীবন বরবাদ হয়ে যেতো। তারপর হতাশ মুখে বললো…
কিন্তু..কিন্তু..এখন..আমার মেয়ে মিষ্টি মা,র উপায় কি হবে? বলে জসিম মিয়া কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়লো।সৌরভ-শান্তনার স্বরে বললো, কিচ্ছু হবেনা আঙ্কেল। যদি কিছু মনে না করেন। তাহলে আমি আপনার মেয়ে মিষ্টিকে কোন যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করতে চাই।
তারপর মাথাটা একটু নিচু করে বলেো..যদি আপনি…। মিষ্টির বাবা বললো: সেতো খুবই আনন্দের কথা বাবা কিন্তু…সৌরভের মা জয়তুন নেছে এগিয়ে এসে বললো। আর কোন কিন্তু নয় বেয়াই মশায়..।
আপনার যদি কোন আপত্তি না থাকে মিষ্টি মাকে আমি আমার ছেলের বৌ করে ঘরে নিয়ে যেতে চাই। মিষ্টি মাকে আমি আমার মেয়ের মত করেই যত্নে আগলে রাখবো বেয়াই।
মিষ্টির বাবা রফিক মিয়া বললো…এটা.. এটা তো আমার, আর আমার মেয়ের পরম সৌভাগ্য বেয়াইন সাহেবা…। আজ থেকে মিষ্টি শুধু আমার না।আপনারও এক মেয়ে বেয়াইন।তারপর..মিষ্টির হাত ধরে…এই নাও বাবা সৌরভ।আজ থেকে আমার মেয়ে মা,মিষ্টিকে আমি তোমার হাতে তুলে দিলাম। জয়তুন কাজী সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বললো…কাজী সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করুন।কাজী আলহামদুলিল্লাহ বলে, বললো জ্বি ঠিক আছে এখুনি শুরু করছি।তারপর বিসমিল্লাহ বলে বিয়ে পড়ানো আরম্ভ করলো। বিয়ের পর রফিক মিয়া সৌরভ ও মিষ্টির দুটি হাত এক করে দিয়ে বললো…আল্লাহ তোমাদের দুজনকে চির সুখি করুক,। সকলে বলে উঠলো আমিন।
নারাংগালী ঝিকরগাছা যশোর বাংলাদেশ।