রাজারহাটে বাইপাস সড়ক না থাকায় তীব্র যানজট, দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ
প্রহলাদ মন্ডল সৈকত:
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা সদর বাজারে বাইপাস সড়ক কিংবা ফ্লাইওভার না থাকায় তীব্র যানজট এখন নিত্য দিনের সঙ্গী হয়েছে। ফলে ক্রমশই বাড়ছে জনদূর্ভোগ। এছাড়া বাজারের সংকীর্ণ সড়কের দু’ধারে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা। নির্ধারীত কোন স্ট্যান্ড না থাকায় অটোরিকসা ও ভ্যান গাড়ির জটলা লেগে থাকে সবসময়। তার উপর মহাসড়কের অনেক যানবাহনও চলছে রাজারহাট উপজেলা শহরের সরু সড়ক দিয়ে। সবমিলে যানজটের শহরে পরিনত হয়েছে রাজারহাট।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরের দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর যাওয়ার পথে এই মহাসড়কের ২০কিলোমিটারের মধ্যে এবং রংপুর থেকে কুড়িগ্রামের পথে ২৮কিলোমিটার পর রয়েছে তিস্তা বাসস্ট্যান্ড। তিস্তা বাসষ্ট্যান্ড থেকে রাজারহাটের ভিতর দিয়ে কুড়িগ্রামের দুরত্ব প্রায় ২০কিলোমিটার। পক্ষান্তরে তিস্তা-কাঁঠালবাড়ি দিয়ে মহাসড়কে কুড়িগ্রামের দূরত্ব প্রায় ২৮কিলোমিটার। ৮কিলোমিটার দূরত্ব কম হওয়ার কারনে এবং তিস্তা-রাজারহাটের সড়কটি অপ্রশস্ত হলেও রাস্তাটি ভালো থাকায় প্রতিদিন কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের অসংখ্য ভারী যানবাহন চলছে রাজারহাট উপজেলা শহরের সরু এ সড়ক দিয়ে। ফলে রাজারহাট বাজার সহ তিস্তা-রাজারহাট ও কুড়িগ্রাম-রাজারহাট সড়কে তীব্র যানজট লেগে থাকে সবসময়।
এদিকে, রাজারহাট-কুড়িগ্রাম ও রাজারহাট-তিস্তা এবং রাজারহাট-নাজিমখাঁন সড়কে দু’ধারে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে শতশত দোকানপাট। কুড়িগ্রাম সড়ক জনপদ বিভাগ কর্তৃক রাজারহাট বাজারে রাস্তার দু’ধার দিয়ে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ নির্মাণ করা হলেও অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত ড্রেনেজগুলো দিয়ে পানি নিস্কাশন তো হয়ই না বরং পথচারিদের চলাফেরায় সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এই সড়কটির যত্রতত্র, বিশেষ করে রাজারহাট বাজার সহ চারপার্শ্বে অটোরিকসা, ভ্যানের জটলা লেগে থাকে সবসময়। রাজারহাটবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাজারহাট-কুড়িগ্রাম সড়কের রেলগেট থেকে বাজার পর্যন্ত একটি বাইপাস রাস্তা কিংবা ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও তা নির্মাণ হয়নি।
এছাড়া তিস্তা ও রাজারহাট-কুড়িগ্রাম সড়কটি ভালো থাকলেও মাত্র ১৭/১৮ফিট প্রস্থের রাস্তার উপর দিয়ে একাধিক যানবাহন ওভারটেকিং করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।
অপরদিকে রাজারহাট-তিস্তাা ও রাজারহাট-কুড়িগ্রাম সড়কে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দিনের বেলা প্রায়ই লোড-আনলোড ট্রাক চলার কারনেও যানজট সৃষ্টি হয়।
রাজারহাট বাজারের অটো চালক টুকু মিয়া বলেন, প্রতিদিনে যানজটের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে সড়কে যাত্রী নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। একারণে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।
রাজারহাট উপজেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আঃ রাজ্জাক বলেন, বাজারের বাইরে অটো স্ট্যান্ড নির্মাণ করা না হলে যানজট নিরসন সম্ভব হবে না।
রাজারহাট আদর্শ বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান আঁশু বলেন, রাজারহাট বাজারে রেল স্টেশন সংলগ্ন বাইপাস সড়ক না হওয়া পর্যন্ত যানজট নিরসন হচ্ছে না। তাই দ্রুত কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
প্রেসক্লাব রাজারহাটের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক প্রহলাদ মন্ডল সৈকত বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বাইপাস সড়ক নির্মাণ ও রাজারহাট বাজারের যানজট নিরসনের দাবী জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় তীব্র যানজটে জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, আমি সবেমাত্র জয়েন্ট করলাম। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাই রাজারহাট বাজারের তীব্র যানজট নিরসনে সকলের সহযোগীতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।